সাম্প্রতিক কৃষি এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত সংবাদ পর্যালোচনাযথেচ্ছা ব্যবহার ও চোরাচালান বন্ধে ইউরিয়ার মূল্য বৃদ্ধি : কৃষিমন্ত্রী
বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের মূল্য অত্যন্ত কম। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ১২ টাকার স্থলে বর্তমান ২০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়। এরপরও সরকারকে ৩ হাজার ৩২০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। যা দেশের জন্য অশনি সংকেত। সারের দাম কম হওয়ায় কৃষক একচেটিয়া ইউরিয়া ব্যবহার করে থাকে। অন্যান্য অতীব প্রয়োজনীয় সার বিশেষ করে টিএসপি, এমপি, জিপসাম, গন্ধক সার, দস্তা সার খুবই কম ব্যবহারের ফলে জমির ঊর্ধ্বরতা শক্তি হ্রাস এবং ফলন কম হচ্ছে। এছাড়া অকৃষি খাত যেমন মুড়িভাজা, প্লাস্টিক কারখানা, পারটেক্স তৈরিতে যথেচ্ছ ইউরিয়া ব্যবহার করে একদিকে যেমন অপচয় হচ্ছে অপর দিকে সীমান্ত পথে চোরাচালান হচ্ছে। যা দেশের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়। তাই নন ইউরিয়া সারের প্রতি কৃষকদের আকৃষ্ট করার জন্য ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধি যুক্তিসঙ্গত। একই সাথে গুটি ইউরিয়া ১ বার ব্যবহার করে ২০% ইউরিয়া সাশ্রয়সহ অপচয় রোধ হবে।
বান্দরবানে ও কক্সবাজারে উৎপাদিত হচ্ছে বিশ্বমানের কফি যা দেশের জন্য আশার বাণী পরীক্ষামূলকভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বান্দরবান এবং কক্সবাজারে কফি চাষ শুরু হয়েছে। যা সত্যি খুবই আশাব্যঞ্জক এবং দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখবে। উঁচু জমি, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না তেমন মাটিতে কফি জন্মানো খুবই সহজ। বাড়ির আঙিনায়, বাড়ির উঠানে, এমনকি গাছের ছায়ায় শুধু ঘেরা দিয়ে এবং বছরে ২ বার পরিচর্যা ও সুষম সার প্রয়োগে লাগানোর ২ বছর পর হতে কপি ধরা শুরু হয়। চা, কফি সারাবিশ্বে এমনকি বাংলাদেশের পানীয় হিসেবে এর কোনো বিকল্প নেই। এক কাপ চা সাধারণত ৫-১০ টাকা কিন্তু ১ কাপ কফি ২০-৩০ টাকা। এর চাহিদাও প্রচুর এমনকি বিদেশ রফতানির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ১৯৮৭ সনে হর্টিকালচার সেন্টার, গৌরীপুর, ময়মনসিংহের টিন শেড অফিসের সামনে আধা ছায়ায় সমতল ভূমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ৮-১০টি কফি চারা লাগানোর ব্যবস্থা করি। বৃষ্টির সময় টিনের চালার পানি গোড়ায় পড়তো। তাতেও মাত্র ১ বছর পর হতে কফি ধরা শুরু হয়। ২ বছরে গাছের উচ্চতা ২.৫০-র্৩ ফুট লম্বা হয়ে গাছ ভর্তি কফি ফল ধরে। এতে বুঝা যায় একটু যত্ন নিলে বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় কফি চাষ সম্ভব। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে বিদেশেও রফতানি করা যাবে। কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ অনেক আগেই এ নিয়ে কাজ করলে দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন সম্ভব হতো। এ ব্যাপারে সরকারের বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। অন্তত দেশের চাহিদা মেটাতে পারলেও কয়েকশ’ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশে পাম চাষ : উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ও লাভজনক
বাংলাদেশে যে পরিমাণ ভোজ্যতেল উৎপাদিত হয় তা চাহিদার মাত্র ২২%। বাকি তেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় এবং এতে প্রায় খরচ হয় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে কেবলমাত্র সরিষার ভোজ্যতেল হিসেবে অধিকহারে উৎপাদিত হয়। তাও সব জেলায় সম্ভব নয়। তারপর রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পোকার আক্রমণ, সময়মতো বৃষ্টি, সেচের অভাব। এ ক্ষেত্রে পাম গাছ লাগিয়ে অন্তত ৫০% ভাগ তেল আমদানি কমানো যেতে পারে। মালয়েশিয়া পামগাছের আদি নিবাস সুদূর আফ্রিকা থেকে শোভাবর্ধনের জন্য ১৯১১ সনে নিয়ে আসে। ১৯১৭ সনে একে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে বর্তমানে ৬.৫০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। সাড়ে ৩ লাখ শ্রমিক তাতে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ব্যক্তি উদ্যোগে মালয়েশিয়া থেকে পাম চারা এনে ১৯৯৭ সনে ঘাটাইল, টাঙ্গাইলের ওসমান গণী পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সফলতা অর্জন করে ‘হেলেন কেলার ও মাদার তেরেসাঁ পদক’ অর্জন করে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বা বাড়ির আঙিনায় কমপক্ষে ৫টি এবং এর অধিক নারিকেল গাছ রয়েছে। তেমনি প্রতি বাড়িতে কমপক্ষ যদি ২ থেকে ৫টি পাম গাছ লাগানো হয় তাতে প্রতি পরিবারের বার্ষিক চাহিদা পূরণ সম্ভব। এর জন্য তেমন কোনো বড় কারখানা বা ঘানির প্রয়োজন হয় না। এর চেয়ে সহজ পদ্ধতি হতে পারে না। নারিকেল থেকে নারিকেল তেল আহরণের যত কঠিন ও সময় সাপেক্ষ তার অর্ধেক সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশেষভাবে ফল থেকে মাংস আলাদা করে সিদ্ধ করতে হয়। যা ঠাণ্ডা করে হাত দিয়ে কচলিয়ে নিংড়িয়ে কাপড়ে দিয়ে ছেঁকে পাতিলে জাল দিয়ে পানি বাষ্পিভূত করলেই তেল পাওয়া যাবে। তাই আপার সম্ভাবনাময় ও এ শিল্পকে অতি দ্রুত প্রকল্প প্রণয়ন করে প্রতিটি উপজেলায় কৃষকের বাড়িতে ৫টি করে চারা সরবরাহ করা হলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে কোনো কৃষক পরিবার বাজার থেকে তেল না কিলে পারিবারিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে। একইভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির যাঁতাকল থেকে সাধারণ মানুষ রেহাই পাবে।
বাংলাদেশে যে পরিমাণ ভোজ্যতেল উৎপাদিত হয় তা চাহিদার মাত্র ২২%। বাকি তেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় এবং এতে প্রায় খরচ হয় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে কেবলমাত্র সরিষার ভোজ্যতেল হিসেবে অধিকহারে উৎপাদিত হয়। তাও সব জেলায় সম্ভব নয়। তারপর রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পোকার আক্রমণ, সময়মতো বৃষ্টি, সেচের অভাব। এ ক্ষেত্রে পাম গাছ লাগিয়ে অন্তত ৫০% ভাগ তেল আমদানি কমানো যেতে পারে। মালয়েশিয়া পামগাছের আদি নিবাস সুদূর আফ্রিকা থেকে শোভাবর্ধনের জন্য ১৯১১ সনে নিয়ে আসে। ১৯১৭ সনে একে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে বর্তমানে ৬.৫০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। সাড়ে ৩ লাখ শ্রমিক তাতে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ব্যক্তি উদ্যোগে মালয়েশিয়া থেকে পাম চারা এনে ১৯৯৭ সনে ঘাটাইল, টাঙ্গাইলের ওসমান গণী পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সফলতা অর্জন করে ‘হেলেন কেলার ও মাদার তেরেসাঁ পদক’ অর্জন করে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বা বাড়ির আঙিনায় কমপক্ষে ৫টি এবং এর অধিক নারিকেল গাছ রয়েছে। তেমনি প্রতি বাড়িতে কমপক্ষ যদি ২ থেকে ৫টি পাম গাছ লাগানো হয় তাতে প্রতি পরিবারের বার্ষিক চাহিদা পূরণ সম্ভব। এর জন্য তেমন কোনো বড় কারখানা বা ঘানির প্রয়োজন হয় না। এর চেয়ে সহজ পদ্ধতি হতে পারে না। নারিকেল থেকে নারিকেল তেল আহরণের যত কঠিন ও সময় সাপেক্ষ তার অর্ধেক সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশেষভাবে ফল থেকে মাংস আলাদা করে সিদ্ধ করতে হয়। যা ঠাণ্ডা করে হাত দিয়ে কচলিয়ে নিংড়িয়ে কাপড়ে দিয়ে ছেঁকে পাতিলে জাল দিয়ে পানি বাষ্পিভূত করলেই তেল পাওয়া যাবে। তাই আপার সম্ভাবনাময় ও এ শিল্পকে অতি দ্রুত প্রকল্প প্রণয়ন করে প্রতিটি উপজেলায় কৃষকের বাড়িতে ৫টি করে চারা সরবরাহ করা হলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে কোনো কৃষক পরিবার বাজার থেকে তেল না কিলে পারিবারিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে। একইভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির যাঁতাকল থেকে সাধারণ মানুষ রেহাই পাবে।
দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে চাষযোগ্য ২১ প্রজাতির ফসলের বীজ উদ্ভাবন
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর জমি লবণাক্ততা ও লবণাধিক্যের কারণে পতিত পড়ে থাকতো। শস্য বহুমুখীকরণের আওতায় নানাবিধ ফসলের চাষ ছিল অসম্ভব। ওই সকল জমিতে ৬-২০ ডিএস পর্যন্ত লবণাক্ততা বিদ্যমান। সাধারণত ১০ ডিএসএর উপরে লবণ মাত্রা থাকলে কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হতো না। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সাতক্ষীরার বিনেরপেতা গবেষণা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিকরা দীর্ঘদিন গবেষণা করে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততা সহনশীল ২১ ধরনের ফসলের চাষ উপযোগ্য জাত উদ্ভাবন করেছেন। যা দেশের খাদ্য শস্য উৎপাদনে নতুন এলাকা সংযোজন হলো। ২০১৫ সনের মধ্যে কৃষকদের জন্য সরবরাহযোগ্য ২১টি ফসলের সব কটি জাত সরবরাহ করতে পারবে। আশার কথা হলো, এ বছরই মুগডাল, আলু, মাসকলাই, বারি টমেটো ৫ এবং ৬ বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করছে। গবেষণালব্ধ ফসলের মধ্যে বর্তমান পরীক্ষাধীন রয়েছে সয়াবিন, সরিষা, গোলআলু, মিষ্টিআলু, কুমড়া, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ভুট্টা, বার্লি, গম, বাদাম, তিল, মুগডাল, কউপি (ফেলন ডাল), খেসারি, তরমুজ, বাঙ্গি, ঢেঁড়স, করলা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব ফসলের জাত নির্ধারণসহ বীজ সরবরাহ দেয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে খুলনা, সাতৰীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, নোয়াখালী চরাঞ্চলসহ হাজার হাজার হেক্টর জমি লবণাক্ততা কারণে পতিত না থেকে চাষ আবাদযোগ্য হলে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে এবং তাদের পরিবারে জীবনমান উন্নয়ন ও আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।
সুগারবিট আবাদ : শতকরা ১৪-২০ ভাগ হারে চিনি উৎপাদন সম্ভব
দেশের আখের বিকল্প হিসেবে সুগারবিট আবাদ পরীক্ষামূলকভাবে ফলপ্রসূ হওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে চিনি উৎপাদনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন সম্ভব হবে। সারা বিশ্বে ৩০-৩৫ ভাগ চিনি উৎপাদিত হয় সুগারবিট থেকে। বাংলাদেশের মাটিতে ও সুগারবিট চাষ করে অল্প সময়ের ফসল হিসেবে সুগারবিট থেকে ১৪%-২০% চিনি আহরণ সম্ভব। যা আখের চেয়ে (৮%-১০%) ডবল। সুগার বিটের উৎপাদন ও আখের চেয়ে বেশি অর্থাৎ হেক্টরপ্রতি ৩৫-৬৩ টন পর্যন্ত পাওয়া যায়। আখ চাষে সময় লাগে ১২-১৫ মাস সুগারবিটে সময় লাগে মাত্র ৫-৬ মাস। অর্থাৎ বাকি ৬ মাস অন্য ফসল আবাদ করা যাবে। এর চাষ পদ্ধতিও সহজ। মুলা, শালগম, ওলকপির মতো চাষ করতে হবে। দেখাতে অনেকটা শালগমের মতো। আখের জন্য যেমন ট্রেইলর বা ট্রলিতে অনেক জায়গায় প্রয়োগ হয়। সুগারবিট পরিবহনেও জায়গা লাগে অনেক কম। অর্থাৎ শালগম বা বড় গোল আলুর মতো সাইজ (ওজন) হয় সুগার বিট। তাই পরিবহন ও সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ খুবই সহজ। তাই সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদনে শুধু সরকারি উদ্যোগ নয় পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা উদ্যোগ নিয়ে প্রয়োজনে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় এনে এ শিল্প বিকশিত করা এখন কেবলমাত্র সময়ের দাবি।
দেশের আখের বিকল্প হিসেবে সুগারবিট আবাদ পরীক্ষামূলকভাবে ফলপ্রসূ হওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে চিনি উৎপাদনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন সম্ভব হবে। সারা বিশ্বে ৩০-৩৫ ভাগ চিনি উৎপাদিত হয় সুগারবিট থেকে। বাংলাদেশের মাটিতে ও সুগারবিট চাষ করে অল্প সময়ের ফসল হিসেবে সুগারবিট থেকে ১৪%-২০% চিনি আহরণ সম্ভব। যা আখের চেয়ে (৮%-১০%) ডবল। সুগার বিটের উৎপাদন ও আখের চেয়ে বেশি অর্থাৎ হেক্টরপ্রতি ৩৫-৬৩ টন পর্যন্ত পাওয়া যায়। আখ চাষে সময় লাগে ১২-১৫ মাস সুগারবিটে সময় লাগে মাত্র ৫-৬ মাস। অর্থাৎ বাকি ৬ মাস অন্য ফসল আবাদ করা যাবে। এর চাষ পদ্ধতিও সহজ। মুলা, শালগম, ওলকপির মতো চাষ করতে হবে। দেখাতে অনেকটা শালগমের মতো। আখের জন্য যেমন ট্রেইলর বা ট্রলিতে অনেক জায়গায় প্রয়োগ হয়। সুগারবিট পরিবহনেও জায়গা লাগে অনেক কম। অর্থাৎ শালগম বা বড় গোল আলুর মতো সাইজ (ওজন) হয় সুগার বিট। তাই পরিবহন ও সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ খুবই সহজ। তাই সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদনে শুধু সরকারি উদ্যোগ নয় পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা উদ্যোগ নিয়ে প্রয়োজনে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় এনে এ শিল্প বিকশিত করা এখন কেবলমাত্র সময়ের দাবি।
কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে প্রায় ১ কোটি কৃষকের ১০ টাকার ব্যাংক হিসেবে খোলা : কৃষি ঋণ বিতরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে ১২ মে ২০১১ পর্যন্ত ৯৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৪২ জন কৃষক ব্যাংক হিসাব খুলেছেন। যা দেশের কৃষি উন্নয়ন তথা কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রাপ্তি, কৃষি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কাজে কৃষক উপকৃত হবে এবং তাদের মধ্যে সঞ্চয় করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। কোনো কৃষকের যদি কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড থেকে থাকে তাহলে ওই কৃষককে কোনো ফর্ম পূরণ করতে হবে না। মাত্র ১০ টাকা জমা দিয়ে আমানত হিসাব খুলতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বছর ১৭ জানুয়ারি সার্কুলার বলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যে কোনো ব্যাংকের এ হিসাব খোলা যাবে। এ হিসাবে (একাউন্ট) ন্যূনতম স্থিতি রাখার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। ব্যাংকগুলো কোনো চার্জ বা কোনো ফি এ হিসাব থেকে নিতে/কর্তন করতে পারবে না। এমনকি চেক বই এর অপ্রতুলতা থাকলে সে ৰেত্রে তার পরিবর্তে ভাউচারের মাধ্যমেও হিসেবের লেনদেন করতে পারবে। কৃষকের পাশাপাশি সম্প্রতি সমাজের অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বর্তমান অর্থবছরে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লৰ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ৮০% এর বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। পূর্বের বছর এ সময়ে মাত্র ৭১% ঋণ বিতরণ করা হয়। বর্তমান বছর শতভাগ কৃষি ঋণ বিতরণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আরো উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো নীতিমালার অভাবে এর আগে কোনো বর্গাচাষি ঋণ পেত না। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ২শ’ কোটি টাকা বর্গাচাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ১০% সুদে প্রতি কৃষক ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। যা কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তন এবং কৃষি কাজে আগ্রহ বাড়াতে সুবিধা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে ১২ মে ২০১১ পর্যন্ত ৯৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৪২ জন কৃষক ব্যাংক হিসাব খুলেছেন। যা দেশের কৃষি উন্নয়ন তথা কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রাপ্তি, কৃষি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কাজে কৃষক উপকৃত হবে এবং তাদের মধ্যে সঞ্চয় করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। কোনো কৃষকের যদি কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড থেকে থাকে তাহলে ওই কৃষককে কোনো ফর্ম পূরণ করতে হবে না। মাত্র ১০ টাকা জমা দিয়ে আমানত হিসাব খুলতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বছর ১৭ জানুয়ারি সার্কুলার বলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যে কোনো ব্যাংকের এ হিসাব খোলা যাবে। এ হিসাবে (একাউন্ট) ন্যূনতম স্থিতি রাখার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। ব্যাংকগুলো কোনো চার্জ বা কোনো ফি এ হিসাব থেকে নিতে/কর্তন করতে পারবে না। এমনকি চেক বই এর অপ্রতুলতা থাকলে সে ৰেত্রে তার পরিবর্তে ভাউচারের মাধ্যমেও হিসেবের লেনদেন করতে পারবে। কৃষকের পাশাপাশি সম্প্রতি সমাজের অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বর্তমান অর্থবছরে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লৰ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ৮০% এর বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। পূর্বের বছর এ সময়ে মাত্র ৭১% ঋণ বিতরণ করা হয়। বর্তমান বছর শতভাগ কৃষি ঋণ বিতরণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আরো উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো নীতিমালার অভাবে এর আগে কোনো বর্গাচাষি ঋণ পেত না। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ২শ’ কোটি টাকা বর্গাচাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ১০% সুদে প্রতি কৃষক ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। যা কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তন এবং কৃষি কাজে আগ্রহ বাড়াতে সুবিধা হবে।
নতুন অর্থবছরে ৩০ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদা নির্ধারণ
চলতি ২০১১-২০১২ অর্থবছরের জন্য ইউরিয়া সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। জানা গেছে, নতুন অর্থবছরে যাতে সারের কোনো ঘাটতি না হয় সেজন্য এখন থেকেই চাহিদা পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাই ৩০ লাখ মে. টন ইউরিয়া সারের চাহিদার আলোকে ১০ লাখ মে. টন দেশের সার কারখানা থেকে প্রাপ্তিসহ বাকি ২০ লাখ মে. টন আমদানির ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চুক্তি আওতায় ৮ লাখ মে. টন। আনৱর্জাতিক দরপতের মাধ্যমে ৮ লাখ মে. টন এবং কাফকো (কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি, চট্টগ্রাম) থেকে নেয়া হবে বাকি ৪ লাখ মে. টন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ইউরিয়া সার ব্যবহার হয় ২৪ লাখ মে. টন। বিদায়ী অর্থবছরে (২০১০-২০১১) ইউরিয়া সার ব্যবহারের লৰ্যমাত্রা ছিল ২৭ লাখ মে. টন। এতে বুঝা যায় দিন দিন ইউরিয়া সারের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাই আমাদের ডিএপি সার গুটি ইউরিয়াসহ নন ইউরিয়া সার ব্যবহারে দিকে নজর দিতে হবে।
চলতি ২০১১-২০১২ অর্থবছরের জন্য ইউরিয়া সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। জানা গেছে, নতুন অর্থবছরে যাতে সারের কোনো ঘাটতি না হয় সেজন্য এখন থেকেই চাহিদা পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাই ৩০ লাখ মে. টন ইউরিয়া সারের চাহিদার আলোকে ১০ লাখ মে. টন দেশের সার কারখানা থেকে প্রাপ্তিসহ বাকি ২০ লাখ মে. টন আমদানির ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চুক্তি আওতায় ৮ লাখ মে. টন। আনৱর্জাতিক দরপতের মাধ্যমে ৮ লাখ মে. টন এবং কাফকো (কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি, চট্টগ্রাম) থেকে নেয়া হবে বাকি ৪ লাখ মে. টন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ইউরিয়া সার ব্যবহার হয় ২৪ লাখ মে. টন। বিদায়ী অর্থবছরে (২০১০-২০১১) ইউরিয়া সার ব্যবহারের লৰ্যমাত্রা ছিল ২৭ লাখ মে. টন। এতে বুঝা যায় দিন দিন ইউরিয়া সারের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাই আমাদের ডিএপি সার গুটি ইউরিয়াসহ নন ইউরিয়া সার ব্যবহারে দিকে নজর দিতে হবে।
ইঁদুর নিধন : শত কোটি টাকা খরচ করে ১২ হাজার কোটি টাকার ফসল রক্ষা
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর এক প্রশ্ন উত্তরে জানা যায়, ইঁদুরের আক্রমণে গত অর্থবছরে ৪৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকার কৃষিপণ্য নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ধান ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, গম ৪৪ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, ইঁদুরের আক্রমণে শুধু ধানগমই নষ্ট হচ্ছে না অন্যান্য কৃষি পণ্য যেমন আখ, ডাল, সরিষা, ভুট্টা, নারিকেল, সুপারি, গুদামজাত ও গোলায় সংরক্ষিত শস্যসহ অন্যান্য শস্য নিয়ে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ হুমকি স্বরূপ। তাই ইঁদুর নিধনে বা নিয়ন্ত্রণে আলাদা বাজেট রাখতে হবে। এতে ১০০ কোটি টাকা খরচ হলেও ১ হাজার কোটি টাকার জাতীয় সম্পদ ফসল রক্ষা করতে পারবে। যা জাতীয় উন্নয়নে বিরাট মাইল ফলক স্থাপনসহ ইঁদুর কর্তৃক পেস্নগসহ অন্যান্য মারাত্মক সংক্রমণ জীবাণু বহনে ব্যবহার করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয় দরিদ্র পরিবারে ঘরের ভিটায়, মাটি খুঁড়ে বাসা বেঁধে, লেপ, তোষক, কাঁথা, বালিশ, বিছানা, কাপড় চোপড় কেটে টুকরা করে আরো কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করে থাকে। তাই এ ব্যাপারে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা রয়েছে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্মশালা : কৃষক ৬০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্র পাবেন
দেশের কৃষকদের মধ্যে ৬০% ভর্তুকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র বিক্রির সফল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আপাতত ১০ জেলার ২০ উপজেলা বাছাই করা কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই, সার প্রয়োগ ও নিড়ানি যন্ত্রসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্র কেনার জন্য এ সুযোগ পাবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে গাজীপুর, গাটবান্ধা, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ব্রি-ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পৃথক পৃথকভাবে এ ধরনের কৃষি যন্ত্র বিতরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
দেশের কৃষকদের মধ্যে ৬০% ভর্তুকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র বিক্রির সফল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আপাতত ১০ জেলার ২০ উপজেলা বাছাই করা কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই, সার প্রয়োগ ও নিড়ানি যন্ত্রসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্র কেনার জন্য এ সুযোগ পাবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে গাজীপুর, গাটবান্ধা, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ব্রি-ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পৃথক পৃথকভাবে এ ধরনের কৃষি যন্ত্র বিতরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
ড. হাসানুজ্জামান : প্রথিতযশা ধান বিজ্ঞানী বার্ধক্যজনিত রোগে শয্যাশায়ী
এদেশের ইতিহাসে ধান গবেষণা ও উফশী জাত উদ্ভাবনের পথ প্রদর্শক হিসেবে অন্তত সর্বাগ্রে স্মরণ করতে হলে একটি নাম উচ্চারণ করতে হবে তিনি ড. হাসানুজ্জামাস। আন্তর্জাতিক বিশ্বে ‘ব্রি’ কে পরিচিতি করা, ইরি’র (ইন্টারন্যানাল রাইস রিচার্চ ইনস্টিটিউট) এর সান্বিদ্ধে এসে তার নিজের হাতে ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উফশী ২৪টি জাতের ফসল উদ্ভাবন ও ড. হাসানুজ্জামান এর অবদান অনম্বিকার্য। যা দেশের জন্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। অনেকেরই জানা নেই কী বিশাল অবদান তার এ দেশের ধান গবেষণায়। ১৯৬৯ সন থেকে ধান বিশেষজ্ঞ (ইকোনমিক বোটানিস্ট) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) প্রতিষ্ঠালগ্নে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৮৪ সনে অবসরগ্রহণ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বেই বহাল থেকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটকে নিয়ে গেছেন কৃতিত্বপূর্ণ অবস্থানে। বাংলাদেশের প্রথম রাইস ব্রিডার হিসেবে ধান গবেষণায় তার নেতৃত্বেই আসে যুগান্তকারী সাফল্য।