একনজরে মাশরুম চাষ উৎপাদন প্রযুক্তি
মাশরুম একটি পুষ্টিকর সবজি। সাধারণত: সবজির মতো মাশরুম মাটিতে জন্মায় না। এটি নিম্নশ্রেণীর ছত্রাক জাতীয় পরজীবী উদ্ভিদ। জীবন ধারনের জন্য এরা জৈবিক বস' (Organic mattor) থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে। আশির দশকের শুরুতে এদেশে পরীক্ষামূলকভাবে মাশরুম চাষ শুরু হয়। সে সময় সাভারে অবসি'ত কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর আওতাধীন ২টি কালচার সেন্টারে একটি মাশরুম স্পন উৎপাদন স্থাপিত হয়। উক্ত কেন্দ্রের উদ্যোগে আশে পাশের চাষীদের স্পর্ন সরবরাহ ও মাশরুম উৎপাদনে কারিগরী সহায়তা প্রধানের মাধ্যমে মাশরুমের চাষ শুরু হয়। বর্তমানে সাভারে মাশরুম সেন্টার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাশরুম উৎপাদন কার্যক্রম আরো বিস্তারিত কাজ রয়েছে।
পুষ্টিমাণ :
খাদ্য হিসেবে মাশরুম অতুলনীয়। প্রাচীনকাল থেকেই এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ, সুস্বাদু ও দামী খাবার হিসেবে বিবেচিত।
মাশরুম প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি। তাই একে সবজি মাংসও বলা হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে (শুকনো মাশরুম) ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
মাশরুম ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও কমমাত্রায় ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। লৌহ কম থাকাতেও সহজলভ্য অবস্থায় থাকে বলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে মাশরুম সহায়তা করে।মাশরুম খুব নিম্নশক্তি সম্পন্ন খাবার (Low calorie)। এতে কোলেষ্টরল নেই, চর্বির পরিমাণ অত্যনত্ম কম (২-৮%) কিন' শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড লিনোলোয়িক এসিড রয়েছে।
মাশরুমের পরিমিত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও যথেষ্ট আঁশ (৮-১০%) থাকে। এতে স্টার্চ নেই। শর্করার পরিমাণ কম বিধায় বহুমূত্র রোগীদের জন্য মাশরুম আদর্শ খাবার।কম চর্বি, কোলোস্টেরকমুক্ত এবং লিনোলেয়িক এসিড সমুদ্ধ হওয়ায় মাশরুম হৃদরোগীদের জন্যও খুব উপকারী।
মাশরুমের ঔষধিগুণ ও নানাবিধি ব্যবহার :
বিভিন্ন রোগব্যধিতে মাশরুমের ব্যবহার সুবিদিত। বাত, ব্যথা, জন্ডিস, কৃমি, রক্ত বন্ধ হওয়ার কাজে মাশরুম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মাশরুম রক্তচাপ কমায় এবং টিউমার কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে।
নিয়মিত মাশরুম থেকে শারিরীক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি হয়। রক্ত সঞ্চালণ বৃদ্ধি পায় এবং সর্দি, কাশি দূর হয়।
মাশরুম উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমুত্র রোগীদের জন্য উপকারী।
মাশরুমে যথেষ্ট আঁশ (ঋরনড়প) থাকার শরীর স্লীম রাখতে সহায়তা করে।
মাশরুম কৌষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। মাশরুম প্রোটিনের হজম ক্ষমতা (Digestability) শতকরা ৭০-৮০ ভাগ হওয়ায় রোগীদের জন্য সহজপাক এবং অত্যনত্ম গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
রং বোতলের কর্ক. ছবির ফ্রেম, ফুলদানী হিসেবেও মাশরুম ব্যবহার করা হয়।
মাশরুমের জাত:
প্রকৃতিতে মাশরুমের কয়েক হাজার জাত রয়েছে যার মধ্যে ৮-১০টি জাতের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আদ্রতা মাশরুম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বাংলাদেশের চাষপযোগী মাশরুমের জাতগুলো হলো-
ক্রমিক নং সাধারণ নাম ইংরেজী নাম বৈজ্ঞানিক নাম
১ ঝিনুক মাশরুম Oyster mushroom Pleurisies Sapp
২ দুধ মাশরুম Milky mushroom Calocybe indica
৩ কান মাশরুম Wood ear mushroom Auricularia polytricha
৪ বোতাম মাশরুম Button mushroom Agaricus bisporus
৫ তাপ সহনশীল বোতাম মাশরুম Heat tolerate button mushroom Agaricus bitorquis
৬ শিতাকে মাশরুম Shitake mushroom Lantinula edodes
৭ খড় মাশরুম Paddy straw mushroom Volveriella volvacea
চাষ পদ্ধতি (ঝিনুক মাশরুম):
বাংলাদেশে বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে ঝিনুক মাশরুমের চাষই বেশি প্রচলিত। চাষীদের জন্য স্পন ভর্তি সাবষ্ট্রেট সহ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত পিপি ব্যাগ সরবরাহ করা হয়। সরবরাহকৃত এসব ব্যাগ থেকে চাষীরা ফসল উৎপাদন করে থাকেন। মোটামুটি ৫০০ গ্রাম ওজনের এসব ব্যাগের ভিতরে উৎপাদন হচ্ছে-
১. কাঠের গুড়া = ৬৪%
২. গমের ভূষি = ৩২%
৩. ধানের তুষ =৪%
উক্ত মিশ্রণের সাথে সামান্য পরিমাণ চুন এবং পানি মিশানো হয়। প্যাকেটগুলো খড়ের চাষাবিশিষ্ট বাঁশের বেড়া ও পাকা মেঝের ঘরে কাঠ ও বাঁশের তাকে সারি করে সাজিয়ে রাখতে হবে।
অত:পর ব্যাগের দুপাশে অধর্চন্দ্রাকৃত্রির করে কেটে কাটা অংশটির খানিকটা চেছে ফেলে দিতে হবে।
চাছার পর ব্যাগটি পরিষ্কার পানিতে ২১-৩০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে।
ব্যাগটি অত:পর পরিষ্কার ফ্লোর বা তারের জালির ওপর আধাঘন্টা সময় উল্টে রাখতে হবে যাতে ভেতরের বাড়তি পানি ঝড়ে যায়।
এবার চাষঘরে কাঠের ব্যাক বা বাঁশের মাচায় পরিমিত বিছিয়ে ব্যাগগুলো তার ওপর সারিবদ্ধভাবে রাখতে হবে।
বাইরের তাপমাত্রা কম থাকলে ব্যাগের উপর পলিথিন ঢেকে দিয়ে ২/৩ দিন রাখতে হবে যাতে ব্যাগের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এ সময় ঘরের আর্দ্রতা ৮০% এবং তাপমাত্রা ২৫-৩০০ সে. হওয়া দরকার। ধারনা দিয়ে-
ব্যাগগুলোতে নিয়মিত পানি সেপ্র করতে হবে।
পলিথিন ডাকা থাকলে ৩/৪ বার ১০-১৫ মি. সময় ডাকনা সরিয়ে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
২/৩ দিন পর ব্যাগের কাটা অংশ দিয়ে সাদা পিন সদৃশ অংশ দেখা যায়। আরো ২/৩ দিন পর মাশরুম বড় হলে সংগ্রহ করতে হবে।
অন্য দুপাশ থেকে অত:পর একইভাবে চেছে দিয়ে পানি স্প্রে করলে নতুনভাবে মাশরুম উৎপাদন হবে।
একটি মাশরুমের ব্যাগ থেকে ৩/৪ বার ফসল তোলা যায়।
পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমন
মাশরুমে মাছির প্রকোপ দেখা দিতে পারে। এজন্য ম্যালাথিয়ন (০.১%) স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ফর্মালিডিহাইডে (৪%) তুলা ভিজিয়ে সানস্ট্রেটে ঘসে দিলে সবুজ বাদামী বা নীল মোল্ড দূর হবে।
মাশরুম একটি পুষ্টিকর সবজি। সাধারণত: সবজির মতো মাশরুম মাটিতে জন্মায় না। এটি নিম্নশ্রেণীর ছত্রাক জাতীয় পরজীবী উদ্ভিদ। জীবন ধারনের জন্য এরা জৈবিক বস' (Organic mattor) থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে। আশির দশকের শুরুতে এদেশে পরীক্ষামূলকভাবে মাশরুম চাষ শুরু হয়। সে সময় সাভারে অবসি'ত কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর আওতাধীন ২টি কালচার সেন্টারে একটি মাশরুম স্পন উৎপাদন স্থাপিত হয়। উক্ত কেন্দ্রের উদ্যোগে আশে পাশের চাষীদের স্পর্ন সরবরাহ ও মাশরুম উৎপাদনে কারিগরী সহায়তা প্রধানের মাধ্যমে মাশরুমের চাষ শুরু হয়। বর্তমানে সাভারে মাশরুম সেন্টার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাশরুম উৎপাদন কার্যক্রম আরো বিস্তারিত কাজ রয়েছে।
পুষ্টিমাণ :
খাদ্য হিসেবে মাশরুম অতুলনীয়। প্রাচীনকাল থেকেই এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ, সুস্বাদু ও দামী খাবার হিসেবে বিবেচিত।
মাশরুম প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি। তাই একে সবজি মাংসও বলা হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে (শুকনো মাশরুম) ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
মাশরুম ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও কমমাত্রায় ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। লৌহ কম থাকাতেও সহজলভ্য অবস্থায় থাকে বলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে মাশরুম সহায়তা করে।মাশরুম খুব নিম্নশক্তি সম্পন্ন খাবার (Low calorie)। এতে কোলেষ্টরল নেই, চর্বির পরিমাণ অত্যনত্ম কম (২-৮%) কিন' শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড লিনোলোয়িক এসিড রয়েছে।
মাশরুমের পরিমিত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও যথেষ্ট আঁশ (৮-১০%) থাকে। এতে স্টার্চ নেই। শর্করার পরিমাণ কম বিধায় বহুমূত্র রোগীদের জন্য মাশরুম আদর্শ খাবার।কম চর্বি, কোলোস্টেরকমুক্ত এবং লিনোলেয়িক এসিড সমুদ্ধ হওয়ায় মাশরুম হৃদরোগীদের জন্যও খুব উপকারী।
মাশরুমের ঔষধিগুণ ও নানাবিধি ব্যবহার :
বিভিন্ন রোগব্যধিতে মাশরুমের ব্যবহার সুবিদিত। বাত, ব্যথা, জন্ডিস, কৃমি, রক্ত বন্ধ হওয়ার কাজে মাশরুম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মাশরুম রক্তচাপ কমায় এবং টিউমার কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে।
নিয়মিত মাশরুম থেকে শারিরীক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি হয়। রক্ত সঞ্চালণ বৃদ্ধি পায় এবং সর্দি, কাশি দূর হয়।
মাশরুম উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমুত্র রোগীদের জন্য উপকারী।
মাশরুমে যথেষ্ট আঁশ (ঋরনড়প) থাকার শরীর স্লীম রাখতে সহায়তা করে।
মাশরুম কৌষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। মাশরুম প্রোটিনের হজম ক্ষমতা (Digestability) শতকরা ৭০-৮০ ভাগ হওয়ায় রোগীদের জন্য সহজপাক এবং অত্যনত্ম গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
রং বোতলের কর্ক. ছবির ফ্রেম, ফুলদানী হিসেবেও মাশরুম ব্যবহার করা হয়।
মাশরুমের জাত:
প্রকৃতিতে মাশরুমের কয়েক হাজার জাত রয়েছে যার মধ্যে ৮-১০টি জাতের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আদ্রতা মাশরুম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বাংলাদেশের চাষপযোগী মাশরুমের জাতগুলো হলো-
ক্রমিক নং সাধারণ নাম ইংরেজী নাম বৈজ্ঞানিক নাম
১ ঝিনুক মাশরুম Oyster mushroom Pleurisies Sapp
২ দুধ মাশরুম Milky mushroom Calocybe indica
৩ কান মাশরুম Wood ear mushroom Auricularia polytricha
৪ বোতাম মাশরুম Button mushroom Agaricus bisporus
৫ তাপ সহনশীল বোতাম মাশরুম Heat tolerate button mushroom Agaricus bitorquis
৬ শিতাকে মাশরুম Shitake mushroom Lantinula edodes
৭ খড় মাশরুম Paddy straw mushroom Volveriella volvacea
চাষ পদ্ধতি (ঝিনুক মাশরুম):
বাংলাদেশে বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে ঝিনুক মাশরুমের চাষই বেশি প্রচলিত। চাষীদের জন্য স্পন ভর্তি সাবষ্ট্রেট সহ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত পিপি ব্যাগ সরবরাহ করা হয়। সরবরাহকৃত এসব ব্যাগ থেকে চাষীরা ফসল উৎপাদন করে থাকেন। মোটামুটি ৫০০ গ্রাম ওজনের এসব ব্যাগের ভিতরে উৎপাদন হচ্ছে-
১. কাঠের গুড়া = ৬৪%
২. গমের ভূষি = ৩২%
৩. ধানের তুষ =৪%
উক্ত মিশ্রণের সাথে সামান্য পরিমাণ চুন এবং পানি মিশানো হয়। প্যাকেটগুলো খড়ের চাষাবিশিষ্ট বাঁশের বেড়া ও পাকা মেঝের ঘরে কাঠ ও বাঁশের তাকে সারি করে সাজিয়ে রাখতে হবে।
অত:পর ব্যাগের দুপাশে অধর্চন্দ্রাকৃত্রির করে কেটে কাটা অংশটির খানিকটা চেছে ফেলে দিতে হবে।
চাছার পর ব্যাগটি পরিষ্কার পানিতে ২১-৩০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে।
ব্যাগটি অত:পর পরিষ্কার ফ্লোর বা তারের জালির ওপর আধাঘন্টা সময় উল্টে রাখতে হবে যাতে ভেতরের বাড়তি পানি ঝড়ে যায়।
এবার চাষঘরে কাঠের ব্যাক বা বাঁশের মাচায় পরিমিত বিছিয়ে ব্যাগগুলো তার ওপর সারিবদ্ধভাবে রাখতে হবে।
বাইরের তাপমাত্রা কম থাকলে ব্যাগের উপর পলিথিন ঢেকে দিয়ে ২/৩ দিন রাখতে হবে যাতে ব্যাগের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এ সময় ঘরের আর্দ্রতা ৮০% এবং তাপমাত্রা ২৫-৩০০ সে. হওয়া দরকার। ধারনা দিয়ে-
ব্যাগগুলোতে নিয়মিত পানি সেপ্র করতে হবে।
পলিথিন ডাকা থাকলে ৩/৪ বার ১০-১৫ মি. সময় ডাকনা সরিয়ে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
২/৩ দিন পর ব্যাগের কাটা অংশ দিয়ে সাদা পিন সদৃশ অংশ দেখা যায়। আরো ২/৩ দিন পর মাশরুম বড় হলে সংগ্রহ করতে হবে।
অন্য দুপাশ থেকে অত:পর একইভাবে চেছে দিয়ে পানি স্প্রে করলে নতুনভাবে মাশরুম উৎপাদন হবে।
একটি মাশরুমের ব্যাগ থেকে ৩/৪ বার ফসল তোলা যায়।
পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমন
মাশরুমে মাছির প্রকোপ দেখা দিতে পারে। এজন্য ম্যালাথিয়ন (০.১%) স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ফর্মালিডিহাইডে (৪%) তুলা ভিজিয়ে সানস্ট্রেটে ঘসে দিলে সবুজ বাদামী বা নীল মোল্ড দূর হবে।
No comments:
Post a Comment